শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মায়া- সুষুপ্ত পাঠক

 


মায়া

বাংলায় মায়া শব্দটি একাধিক অর্থ বহন করে। অনেকে নিম্নশ্রেণির প্রাণীদের স্ত্রী প্রজাতি বোঝাতে মায়া শব্দটির ব্যবহার করেন আবার স্নেহ বা মমতা বোঝাতেও মায়া শব্দটির ব্যবহার রয়েছে। আবার শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় ১৮ অধ্যায়ের ৬১ নং শ্লোকের বাংলা অর্থ: “মায়ার পুতুল যেমন মায়ায় চালিত হয়, ঈশ্বর তেমনি সকল প্রাণীর মধ্যে অবস্থান করিয়া নিজে নিজে কর্মবশে তাহাদিগকে চালাইতেছেন।” এখানে মায়া অর্থ যাদু বা রহস্যময়তা। হিন্দু ধর্মে প্রকৃতিকে মায়া বলে হয়েছে। 

বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাঘ বিধবাদের কথা, শংকর কুমার মল্লিক ও দেবপ্রসাদ বিসমিল

 

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ভয়ংকর সুন্দর এক চতুষ্পদ প্রাণি বাঘের বিচরণক্ষেত্র পৃথবীর বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। সুন্দরবনের আশেপাশের মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরনের উদ্দেশ্যে ছুটে যান বনের ভিতর আর তাদের অনেকেই পরিনত হন বাঘের খাবারে। তারপর তাদের পরিবার তথা স্ত্রী-সন্তানদের দূর্ভোগের সীমা থাকে না। বিশেষ করে তাদের স্ত্রীদের যাদেরকে বলা হয় ‘বাঘ বিধবা’, সামাজিকভাবে অনেক ছোট করে দেখা হয়। সন্তানদের নিয়ে ঐসব বাঘ বিধবাদের শুরু হয় কঠিন সংগ্রাম। এইসব সংগ্রামী বাঘ বিধবাদের গল্প উঠে এসেছে “বাঘ বিধবাদের কথা” বইটিতে। গবেষণাধর্মী এই বইটি যৌথভাবে লিখেছেন শংকর কুমার মল্লিক এবং দেবপ্রসাদ বিসমিল। ব্যক্তিগতভাবে জনাব শংকর কুমার মল্লিকের সাথে আমার পরিচয় নেই তবে আইসিটি ফর এডুকেশন এর অ্যাম্বসেডর হিসাবে একসাথে কাজ করার সূত্রে পরিচয় আছে দেবপ্রসাদ মিসমিলের সাথে। তিনিই সম্প্রতি বইটি আমাকে উপহার দেন। যথেষ্ঠ সময় নিয়ে বইটি পড়েছি। যতই পড়েছি ততই জেনেছি সুন্দরবন সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। শুরুতে ‘সুন্দরবন’ নামের উৎপত্তি এবং সুন্দরবনের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে বইটিতে। সুন্দরবনের লৌকিক দেবদেবী ও অলৌকিক কাহিনিও বর্ণনা করা হয়েছে। সুন্দরবনের আশেপাশের মানুষের জীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বনবিবি, গাজী-কালু-চম্পাবতীর কাহিনী। সুন্দরবনে সম্পর্কে আগ্রহী মানুষদের পিপাসা মেটাবে এ বইটি তাতে কোন সন্দেহ নেই। সর্বোপরি যাদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে বইটির মূল কলেবর অর্থাৎ সেই বাঘ বিধবাদের জীবনের কথা বলা হয়েছে খুবই মর্মস্পর্শী ভাষায়। বইটি পড়ার সময় বার বার মনে হয়েছে প্রতিটি বাঘ বিধবাই যেন এক একটি জীবন্ত উপন্যাস। সামাজিকভাবে নিপীড়িত নিগৃহীত এইসব বিধবাদের জীবনের দুঃখের করুণ চিত্র পাঠকের চোখের সামনে সুনিপুণ ও প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরেছেন লেখকদ্বয়। বইটি পড়তে পড়তে মনের অজান্তেই চোখের পাতা ভিজে যাবে পাঠকের।  

পাঠক হিসেবে গল্প, উপন্যাস, ভ্রমনকাহিনী আমার পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকলেও এমন একটি গবেষণাধর্মী বইও যে এতটা ভালো লাগবে তা আমি বইটি পড়ার আগ পর্যন্ত ভাবতে পারিনি। লেখক শংকর কুমার মল্লিক এবং দেবপ্রাসাদ বিসমিলকে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাই শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন। এমন একটি গবেষণাধর্মী বই লেখার পেছনে তাদের যে কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় রয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। বিশেষ করে দেবপ্রসাদ বিসমিল যিনি এর আগেও একটি গবেষনাধর্মী গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন “অগ্নিযুগে বাংলার বিপ্লব ও বিপ্লবী (১৯০১-১৯৪৭)” নামে, আপনার এইসব সৃজনশীল কর্মকান্ড অব্যাহত থাকুক এই শুভ কামনা নিরন্তর।  

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

পারোতো খালি আমার মতো পালের সাথে

 


কোন এক ঝড়বৃষ্টির রাত। একজন মুসলিম পথিক স্থানীয় পাল মশাইদের কালি মন্দিরের ছোট্ট বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। ঝড়ের গতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পথিক বৃষ্টির তোড়ে বাধ্য হয়ে মন্দিরের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে। 

         বৃষ্টিভেজা রাতে, কাঁথা মুড়ি দিয়ে পাল মশাই ঘুমিয়ে পড়েছে। হটাৎ ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখছে; কালী দেবতা তাকে বলছে - "ওরে মূর্খ পাল, তুই মন্দিরে মুসলমান বসিয়ে রেখেছিস! অচিরেই তোর সর্বনাশ হবে!"

মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

পুরস্কার হিসেবে ঘটি, বাটি, থাল ! আর কতকাল ?

 


আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়, বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে সিরামিকের থালা, প্লেট, বাটি, মগ দেওয়ার রীতি বেশ পুরোনো। কিন্তু পুরস্কার হিসেবে থালা, বাটি, মগ কতটা উপযুক্ত তা ভেবে দেখার যথেষ্ঠ অবকাশ রয়েছে। একজন শিক্ষার্থী যখন কোন প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় হয় তখন সেটা তার জন্য একটা অর্জন। এই অর্জনের পুরস্কার হিসাবে তাকে যে থালা, বাটি বা মগ দেওয়া হলো তা কয়েকদিনের মধ্যেই তার বাড়ির থালা, বাটির সাথে মিশে যায়, একজন শিক্ষার্থীর কোন প্রাপ্তি হিসেবে তার আর কোন অস্তিত্বই থাকে না। 

বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩

ট্রেনেযাত্রী বৃদ্ধ ও ১২ জন যুবক


এক বৃদ্ধ ট্রেনে উঠেছে। ঐ বগিতে বৃদ্ধ একাই ছিলেন। এরপর ১২ জন যুবক চলন্ত ট্রেনের ঐ বগিতে উঠেই চিৎকার করে গান গাওয়া শুরু করল। তারা ছুরি দিয়ে আম কেটে কেটে খাচ্ছিলো । 

হঠাৎ একজন বলে উঠলোঃ "চল আমরা ট্রেনের চেইনটা টেনে ট্রেনটাকে থামিয়ে দেই।" 

দ্বিতীয়জন বলল, “না দোস্ত, লেখা আছে পাঁচ শত টাকা জরিমানা অন্যথায় ছয় মাস জেল।" 

১ম যুবক আবার বলল, "আমরা একশো টাকা করে চাঁদা তুলি। বারোশো টাকা হবে বাকী সাত শো টাকা দিয়ে লাঞ্চ করবো। Let's fun friends" (বারোশো টাকা তুলে ১ম যুবকের পকেটে রাখলো)। 

তারপর ৩য় যুবক বলল, "দোস্ত, আমরা চেইন টেনে ঐ বুইড়াটাকে দেখিয়ে দিলে পাঁচ শো টাকাও বাঁচলো আরো বেশি Fun হলো। আমরা ১২ জনে সাক্ষী দিলে টিটি মেনে যাবে।" 

বৃদ্ধ কাঁদতে কাঁদতে হাত জোড় করে বললোঃ "বাবা, তোমরা আমার ছেলের বয়সী। কেনো আমাকে বিপদের মধ্যে ফেলবে?" 

যুবকগুলো বৃদ্ধের অনুরোধ অবজ্ঞা করে চেইনটা টান দিতেই টিটি চলে এসে জিজ্ঞাসা করলোঃ "কে চেইন টেনেছে?" 

যুবকগুলো বৃদ্ধকে দেখিয়ে বললোঃ "ঐ চাচা মিয়া টেনেছে।" 

টিটি বৃদ্ধকে বললোঃ "অকারণে চেইন টানলে পাঁচ শত টাকা জরিমানা অথবা ছয় মাস জেল।" 

যুবকগুলো চিৎকার করে বললোঃ "স্যার, বুইড়া অকারনেই টেনেছে। হো হো হো হো........." 

বৃদ্ধ একটু দাঁড়িয়ে বললোঃ "টিটি সাহেব আমি বিপদে পড়েই চেইন টেনেছি।" 

টিটি বললোঃ "কি বিপদ?" 

বৃদ্ধ বললোঃ "ঐ যুবকগুলো আমার গলায় ছুরি ধরে আমার বারো শো টাকা ছিনতাই করেছে।" 

টিটি বললোঃ "কি সর্বনাশ?" 

বৃদ্ধ বললোঃ "দেখুন ঐ যুবকটির পকেটে টাকা আর ঐ ব্যাগে ছুরি।" 

টিটি পুলিশ কল করে ১২জন যুবককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছিলো। তখন বৃদ্ধ তার পাকা চুল/দাড়ি দেখিয়ে যুবকগুলোকে বললোঃ "এইগুলো বাতাসে পাকে নাই"

(ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩

মাননীয় শঙ্কর দয়াল শর্মা ও ওমানের সুলতান

 


একজন মহান শিক্ষকের প্রতি একজন মহান ছাত্রের সম্মান প্রদর্শন। 

১৯৯৪ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মাননীয় শঙ্কর দয়াল শর্মা তাঁর বিদেশ যাত্রায় ওমানে গিয়েছিলেন। সেইদিন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করল তখন তিনটে অত্যন্ত চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছিল।

রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩

কিনু গোয়ালার গলি-সন্তোষ কুমার ঘোষ

 


যেন নাম থেকেই আন্দাজ করা যায় কেমন হতে পারে কিনু গোয়ালার গলি। বোবা বোবা চেহারার বাড়ি। ছোট ছোট ফোকরচোখ জানালা আর চুন খসা খিলানের হাঁ। আলো যেখানে পালাই পালাই করে, দেয়ালে মাঝে মাঝে স্যাঁতা পড়া দাগ। হারিয়ে যাওয়া অতীতের কথা স্মরণ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া নিতান্ত অসহায়ের মত এই গলির মানুষগুলোরও একেকতা অতীত রয়েছে। যেমন রয়েছে নীলাদেরও। একসময়ে প্রাচুর্য্যে ভরা ছিল তাদেরও জীবন। ক্রমে ক্রমে দারিদ্রতার চরম কষাঘাতে জর্জরিত হতে হতে আজ এই গলিতে ঠাই হয়েছে তাদের। 

বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩

বাড়ি থেকে পালিয়ে- শিবরাম চক্রবর্তী

 


আমার বই ডট কমে একটা তালিকায় বইটা পেয়ে পড়া শুরু করেছিলাম। যদিও শিবরাম চক্রবর্তীর এই বইটির নাম আগেও শুনেছিলাম। কাঞ্চন নামে এক কিশোর তাদের পুরুতের সমবয়সী ছেলে বিনোদের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সে বিনোদের দইয়ের ভাড় কেড়ে নিয়ে তার মাথায় ঢেলে দেয় এবং ক্ষীরের বাটি কেড়ে নেয়। ফলাফল, কিছুক্ষণ বাদেই বাড়ির চাকর এসে খবর দেয় বাবা তার জন্য চাবুক হাতে অপেক্ষা করছে। 

সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩

দায়বন্ধন, সমারেশ মজুমদার

 


ইংরেজিতে এমএ শেষ করেও কোন চাকরী যোগাড় করতে পারিনী জয়দীপ। কোলকাতায় কোথাও থাকার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে পরিচিত একজনের অফিসে চুরি করে রাতে বেলায় ঢুকে রাত্রিযাপন করে সে। আপতদৃষ্টিতে বৈচিত্রহীন এবং অনিশ্চিত এক জীবন কাটানো এই জয়দীপের জীবনে হঠাৎ করেই দু’জন নারীর আবির্ভাব ঘটে। কেমন যেন নিস্তব্ধভাবে শুরু হওয়া উপন্যাসটি হঠাৎ করেই হয়ে ওঠে একটি থ্রিলার। এমন হঠাৎ করেই বিচিত্রসব ঘটনার ঘনঘটায় মনে হয় আমি যেন সমারেশ মজুমদারের কোন লেখা পড়ছি না বরং সস্তা কোন লেখকের লেখা কোন চলচিত্রের চিত্রনাট্য পড়ছি। অবশ্য এটা খুব সাময়িক সময়ের জন্যই মনে হয়েছিল কিন্তু শেষ দিকে দিয়ে আবারো উপলব্দি হলো গল্পের এমন ঘন ঘন বাঁক পরিবর্তন, এমন সাবলিলভাবে উপস্থাপন কোন সস্তা লেখকের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। আর গল্পের শুরুটা যে একেবারে নিস্তব্ধভাবে হয়েছে সেটাও বলাটা মনে হয় ঠিক হলো না। শুরুতেই অযাচিতভাবে একটা গুন্ডা প্রকৃতির মানুষের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় জয়দীপের চরিত্রে আসলেই ভিতরে ভিতরে একটা প্রতিবাদী সত্তা ছিলো। 

সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩

বিল গেটস'র বই পড়া


ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন তাকে চেনেন না এমন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন। গুগল তাকে American Business Magnate বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৯ বছর পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন (২০১০-২০১৩ ছাড়া)। তিনি মাইক্রোসফটেরও প্রতিষ্ঠাতা। চাইলে তিনি আজও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় প্রথম থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি এত বেশি পরিমাণ দান করেন যা একজন মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না। ২০২২ সালেও তিনি আমেরিকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ৫ মিলিয়ন ডলার (!!!) দান করেছেন।

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২

অন্দরমহল, সাদাত হোসাইন, রিভিউ

 


গঙ্গাবতী নামের নদীর তীরঘেষে গড়ে ওঠা এক প্রাচীন জমিদারবাড়ি গঙ্গামহল যার নাম। চারখানা দ্বিতল অট্টালিকা নিয়ে গড়ে ওঠা এই মহলে থাকেন জমিদার বিষ্ণুনারায়ণ ও তার তিন পুত্র। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী জেষ্ঠপুত্র অবনীন্দ্রনারায়ণ পরবর্তী জমিদার হওয়ার কথা থাকলেও সকলের ধারণা জমিদার হিসেবে তিনি উপযুক্ত নয়। কেননা তিনি অত্যন্ত ভাবপ্রবণ এবং খেয়ায়ী একজন মানুষ বরং দ্বিতীয় পুত্র দেবেন্দ্রনারায়ণের মধ্যে রয়েছে জমিদার হওয়ার মত সকল গুণাবলী। দেবেন্দ্রনারায়ণ গঙ্গামহল থেকে কয়েক ক্রোশ দূরে বারোহাটির জঙ্গলের কোল ঘেষে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব এক মহল, বারোহাটি বাগানবাড়ি যার নাম। সকল প্রকার ভোগ-বিলাসের আয়োজন রয়েছে এই মহলে। 

মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২

দ্রোণ পুত্র অশ্বত্থামা

 


অশ্বথামা

অস্ত্রগুরু দ্রোণ এর পুত্র। তার মাতার নাম কৃপী। জন্মের সময় অশ্বের মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরূপ নামকরণ করা হয়। তবে কুরুক্ষেত্রর যুদ্ধে ব্যবহৃত একটি সামরিক হাতির নামও অশ্বত্থামা ছিল। পরিকল্পিতভাবে ভীম হাতিটিকে হত্যা করার পর, সেই সংবাদ যুধিষ্ঠির গুরু দ্রোণকে বলা হলে তিনি ধর্মপুত্রের কথা বিশ্বাস করেন এবং অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এ সময় দ্রৌপদীর ভাই ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণাচার্য্যের শিরোচ্ছেদ করেন। 

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২

অহল্যা

 

ঋষি গৌতমের স্ত্রী। ব্রহ্মা এক পরমাসুন্দরী নারী সৃষ্টির মানসে অন্যান্য জীবের শ্রেষ্ঠ অঙ্গসমূহ নিয়ে অহল্যাকে সৃষ্টি করেছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র তাঁর সতীত্ব হরণ করেন, ব্যভিচারের অপরাধে ঋষি গৌতম তাঁকে অভিশাপ দেন এবং পরবর্তীতে বিষ্ণুর অবতার রাম এসে তাঁকে শাপমুক্ত করেন।

শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২

পরশুরাম কাহিনী




প্রাচীনকালে কান্যকুজ নামক দেশে গাধি নামে এক রাজা ছিলেন। তাঁর সত্যবতী নামে এক কন্যা ছিলো। সেকালে ঋষিরা রাজকন্যা বিবাহ করতেন। মহর্ষি ভৃগুর পুত্র ঋচীক এই কন্যাকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে রাজার কাছে গেলেন। ঋচীক বললেন, “মহারাজ, যদি ঋষিকে কন্যাদান করতে আপত্তি না থাকে— তা হলে আমি আপনার কন্যাকে প্রার্থনা করি।” 

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২

সিঙ্গাড়া আবিষ্কারের কাহিনী

 


বাঙ্গালির খাদ্য তালিকায় বিশেষ করে নাস্তায় সিঙ্গাড়া একটি অতি পরিচিত নাম। কিন্তু আমরা ক’জন জানি এই অসাধারণ খাদ্যবস্তুটির জন্ম বৃত্তান্ত? ইন্টারনেটে সিঙ্গাড়া তৈরি বা সিঙ্গাড়া আবিষ্কার সম্পর্কে বেশকিছু মজার কাহিনী ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে যেটি সবচেয়ে জনপ্রিয় মতবাদ সেটি হল:

মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১

পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা কিছুতেই সহ্য করা হবে না



অনেক অনেককাল আগের কথা, সুবিচার নামে এক দেশ ছিল আর সেই দেশের রাজার নাম ছিল সুশাসক। একবার সেই দেশের এক গৃহস্থের বাড়িতে চুরি হল। চোর শাবল দিয়ে মাটির দেয়াল ফুটো করে ঘরে ঢুকে সকল মালামাল নিয়ে পালিয়ে গেলো। বাড়ির মালিক রাজ দরবারে গিয়ে বিচার চাইলেন। সবশুনে রাজা তার এক মন্ত্রীকে পাঠালেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য। মন্ত্রী চুরি যাওয়া বাড়িতে গেলেন, সব দেখলেন তারপর বাড়ির মালিকের কাছে কিছু উৎকোচ দাবী করলেন। ঘর থেকে সব চুরি যাওয়ায় মাড়ির মালিকের কাছে আর কোন অর্থ ছিল না। এ কথা মন্ত্রী মশাইকে জানাতেই তিনি ভীষণ ক্ষেপে গেলেন এবং রাজার কাছে গিয়ে জানালেন, “মহারাজ, সব দোষ এই বাড়ির মালিকের। বাড়ির মালিক রাতে যথেষ্ঠ সতর্ক ছিল না, বাড়ির দেওয়ালও জরাজীর্ণ, মজবুত না। এই বাড়ি দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। চোর যখন দেয়াল ফুটো করে চুরি করছিল তখন ঐ জরাজীর্ণ দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে চোরের মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল তাই প্রথমে বাড়ির মালিকের বিচার হওয়া উচিৎ।

বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২১

ইন্দুবালা ভাতের হোটেল, কল্লোল লাহিড়ী



“ইন্দুবালা ভাতের হোটেলনামে একটা বইয়ের কভার পেজের ছবি ফেসবুকের কল্যাণে  চোখে পড়ছিল বেশ কিছুদিন হল। লেখকের নাম কল্লোল লাহিড়ী। খানিকটা তাচ্ছিল্যের সাথে মনে হয়েছিল কোথাকার কোন লাহিড়ী, সখ হয়েছে বিভূতিভূষণ হওয়ার। তবু গুগলে সার্চ দিতেই বইটার পিডিএফ ভার্ষণ পেয়ে গেলাম। পড়ব পড়ব করে আরো কিছুদিন কেটে গেল। গতকাল দুপুরের পর ব্রডব্যন্ড বন্ধ ছিল কিছুক্ষণ। কি মনে হতেই বইটা ওপেন করে পড়া শুরু করলাম। তখনও কি জানতাম আমার জীবনের আরো একটি সেরা ভাললাগা বই পড়তে চলেছি আমি?

শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১

নিঃসঙ্গ মা


 

আমি একজন বিধবা মহিলা আমার বয়স এখন ৬০ বছর। আমি স্কুল শিক্ষিকা ছিলাম।

আমার একটা-ই ছেলে যার বয়স এখন ৩৬ বছর। ওর নাম আশিক আদনান দিপ, থাকে অষ্ট্রেলিয়াতে। আমার হাজবেন্ড যখন  মারা যায় তখন আমার বয়স ৪০ বছর। আর আমার ছেলে আশিক আদনান দিপ যাকে আমি দিপ বলে ডাকি ওর বয়স তখন ১৬ বছর।

বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

রসগোল্লা আবিষ্কার


 “রসের গোলক, এত রস কেন তুমি ধরেছিলে হায়।

ইতালির দেশ ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পায়।”

---- সৈয়দ মুজতবা আলী 

সৈয়দ মুজতবা আলী’র সেই বিখ্যাত ‘রসগোল্লা’ গল্পটি অনেকেই পড়ে থাকবেন। শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সকল শ্রেণির মানুষের কাছে রসগোল্লা অমৃতের সমান। দেশে ছেড়ে রসগোল্লার স্বাদ ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশের মাটিতে। কিন্তু কবে, কোথায়, কখন, কিভাবে আর কে প্রথম তৈরি করেন ‘রসগোল্লা’?

রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১

ধ্রুবপুত্র- অমর মিত্র

 


বইয়ের হাট নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে অমর মিত্রের একটা সাক্ষাৎকার দেখে ‘ধ্রুবপুত্র’ পড়তে শুরু করেছিলাম। শুরুতেই এই উপন্যাসের ভাষা আমাকে মুগ্ধ করে আবার কেমন যেন বিরক্তও। কথাটা একটু অদ্ভুত শোনালেও এটাই আমার সত্যিকারের অনুভূতি। কাহিনীর মধ্যে প্রবেশ করে একটা ঘোরলাগা অনুভূতি তৈরি হল। মনে হল আমি যেন একটা স্বপ্নের জগতে ঢুকে পড়েছি। প্রাচীন কাহিনী হিসাবে লেখক এখানে স্বার্থক বলেই আমার মনে হয়েছে। বইটি পড়তে পড়তে আমি সত্যিই হারিয়ে গেছিলাম সেই উজ্জয়নী নগরিতে, সেই মহাকালের মন্দির, সেই বৃষ্টিহীন ধূসর প্রান্তর, রাতের তারা মহারাজ ভর্তৃহরি, সেই গণিকালয় যেন বাস্তব হয়ে উঠে এসেছিল আর আমি সেখানে বিচরণ করছি প্রতিটি চরিত্রের সাথে।