যখন বৃক্ষরাজির ভিতর দিয়ে বহে যাবে সমুষ্ণ বাতাস
নদীর উপর ছায়া ফেলবে গোধূলিকালীন মেঘ
পুষ্পরেণু ভেসে আসবে বাতাসে
আর পালতোলা নৌকা ভেসে যাবে বিক্ষিপ্ত স্রোতধারায়….
সহসা অবলুপ্ত দৃষ্টি ফিরে পেয়ে তুমি দেখবে—
আমার কেশপাশে বিজড়িত রয়েছে অস্থিনির্মিত মালাঃ
তখন--- কেবল তখনই আমি তোমার কাছে আসব…
একাদশ শতকে কুন্তলা নামে এক নারী এই কথাগুলো বলে হারিয়ে গেল মৃত্যুর অতল গহ্বরে। কিন্তু কার কাছে ফিরে আসার অঙ্গীকার করে গেলেন কুন্তলা? চন্দ্রগর্ভ বা পন্ডিত অতীশ দীপংকর। তারপর কি হলো?
সমগ্র উপ্যাসটিকে অতীশ দীপংকরের জীবনী বলা যায় তবে সেটা বললে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। উপন্যাসের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে তিনটি সময়কে কেন্দ্র করে। দশম-একাদশ শতক (৯৮২-১০৫৪ খ্রিষ্টাব্দ), ত্রয়োদশ শতক (১২০০-১২৫০ খ্রিষ্টাব্দ) এবং একবিংশ শতক (সাম্প্রতিক কাল)। এই তিন সময়ের তিন ভিন্ন ভিন্ন মানুষের জীবন অদ্ভুতভাবে একসূত্র গেঁথেছেন লেখক। সাম্প্রতিক কালে অমিতায়ুধ (প্রত্নতত্ত্ববিদ) নামের এক কলকাতার যুবক যিনি একটি প্রাচীন বইয়ের রহস্য উন্মোচন করতে পাড়ি জমান বাংলাদেশের বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে। যেখানে পরিচয় হয় অনঙ্গদাসের কন্যা জাহ্নবির (নাকি কুন্তলা?) সাথে। এই জাহ্নবি কি সেই কুন্তলা যিনি একাদশ শতকে চন্দ্রগর্ভ বা অতীশ দিপংকরের খেলার সাথী ছিলেন? হয়তোবা।
চাগ লোচাবা (তিব্বতের লামা) যিনি তিব্বত থেকে ভারতে আসেন অতীশ দিপংকরের জন্মস্থানের খোজে। দেখা হয় বজ্রডাকিনী স্বয়ংবিদার সাথে। কে এই স্বয়ংবিদা? এও কি সেই কুন্তলা?
তিন সময়ের মধ্যে সংযোগকারী এই উপন্যাসটি লেখকের একটি কঠোর পরিশ্রমের ফল। গভীর দার্শনিক আলোচনা এবং অতীশ দিপংকরের জীবনের নানাদিক এতে খুব চমৎকারভাবে উঠে এসেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন