তখন বাড়িতে
টেলিভিশন ছিল না। শুক্রবার দুপুরের পর বিটিভি'তে পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচিত্র
সম্প্রচারিত হতো বলে পাশের বাড়ির এক কাকু টিভিটা বারান্দায় সকলের দেখার জন্য
উন্মুক্ত করে দিতেন। সেদিনও আগ্রহ নিয়ে ছবি দেখতে বসেছি। ছবির নাম "দীপু
নাম্বার টু"। ছবির প্রিন্ট অথবা যেকোন কারণে শুরুটা খুব বেশি ভাল লাগল না।
তবুও ধৈর্য্য সহকারে দেখে চলেছি। চলতে চলতে কখন যে ছবির মধ্যে পুরোপুরি ডুবে গেছি
আমি নিজেই জানি না। ছবিটা শেষ হতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। সাধারণত সেই সময়ে আমি
সন্ধ্যার সাথে সাথেই বাড়ি ফিরে আসতাম। সেদিন কিন্তু ছবিটি শেষ না করে ফিরতে পারলাম
না।
ছবি শেষ হলে
মনে হল আমি যেন কয়েক ঘন্টার জন্য ভিন্ন কোন পৃথীতে ছিলাম। তারেক, দীপু আর
অন্যান্য চরিত্রগুলো যেন তখনও আমার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। সেদিন বাড়িতে ফিরে পড়ার
টেবিলে বসে কোনভাবে বইটা খুলে চুপচাপ বসে ছিলাম। মনটা ছিল দীপুর আর তারেকদের সাথে।
একসময় মায়ের ডাকে রান্নাঘরে গিয়ে ভাত খেয়ে এসে শুয়ে পড়লাম। কানের কাছে এক একটা
সংলাপ পুনরাবৃতি হচ্ছে,
"তুই তো তবু তোর মা কে কাচ্ছে পাচ্ছিস। আমার মা তো থেকেও
নেই।"
কয়েক বছর পর
একদিন বইটির একটি পিডিএফ কপি পাই অনলাইনে। পড়া শুরু করে আবার ফিরে যাই সেই পুরোনো
সময়ে। সেই আবেগ, সেই
অনুভূতি। পরে আরো কয়েকবার বইটা পড়েছি। আজীবন আমার পড়া সেরা উপন্যাসগুলোর একটি হয়েই
থাকবে "দীপু নাম্বার টু"।
আজ বিকেলে আরো একবার পড়লাম “দীপু নাম্বার টু” এবং অন্যরকম এক ভালোলাগায় ভরে গেল মন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন