বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১

মহাভারত সিক্রেট, ক্রিস্টোফার সি ডয়েল

 


অবসরপ্রাপ্ত নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট বিক্রম সিং খুন হয়েছেন। খুন হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ক্যালিফোর্নিয়ার সান জোসে’তে তার একমাত্র ভাইপো বিজয় সিং কে ৫টা মেইল পাঠিয়ে যান তিনি। অদ্ভুত রহস্যময় সেই মেইলগুলো পড়ে কিছুই বুঝতে পারে না বিজয় সিং। কাকার মৃত্যু সংবাদ শুনে দ্রুত দেশে ফিরে আসে বিজয়। পাশে এসে দাঁড়ায় কাকার বন্ধু ডা. শুকলা আর তার মেয়ে রাধাসাথে যোগ দেয় খুব কাছের বন্ধু কলিন। একে একে ই-মেইলের রহস্য উন্মোচিত হতে শুরু করে। পাঠক নিমেষেই চলে যায় ২৩০০ বছর পূর্বে। খ্রীষ্টপূর্ব ২৪৪ অব্দে তৎকালীন মহান সম্রাট অশোক খোজ পান এক গুপ্ত রহস্যের। মহাভারতেই খুব পুরোনো একটি সংস্করণ যেখানে “বিমান পর্বে” উল্লেখ আছে অদ্ভুত অথচ শক্তিশালী এক মারনাস্ত্রের। সম্রাট অশোক এবং তার মন্ত্রী সুরসেন উপলব্দি করেন এই মারনাস্ত্র নিমেষেই সমগ্র পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতে পারে আর তাই ৯ জন সদস্য নিয়ে গঠন করেন গুপ্ত সংঘ যাদের কাজ এই মারনাস্ত্রকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা। বিক্রম সিং এদেরই বর্তমান দলনেতা ছিলেন।

বিক্রম সিং এর এক সময়ের বন্ধু এবং পাকিস্তানের পরমানু বিজ্ঞানী ফারুক যোগ দেয় তালেবানের সাথে, ৯! এর গুপ্ত রহস্য আর সেই ভয়ংকর মারনাস্ত্রের সন্ধানে শুরু করে অভিযান, পিছু নেয় বিজয় সিং আর তার বন্ধুদের। বিজয় আর রাধাকে বন্দী করে রাখে তালেবান নেতা ফারুক।

ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর অতিরিক্ত পরিচালক ইমরান কিরবাঈ অনুসন্থানে সব জানতে পারেন। ভীম সিং নামের ভারতের এক পুরোনো রাজ পরিবারের সন্তানও জড়িয়ে পড়ে ঘটনার সাথে। উদ্দেশ্য জি-২০ সম্মেলনে বোমা ফেলে বড় বড় দেশের সরকার প্রধানদের সরিয়ে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের সেখানে বসানো। শেষ পর্যন্ত কতটুকু সফল হয় তালেবান যোদ্ধারা? জানতে পড়ে ফেলুন চমৎকার এই বইটি।

সব মিলিয়ে পাঠক কে সর্বদা উৎকণ্ঠায় কাটাতে হয়। অনেকদিন পর চমৎকার একটি রহস্য-রোমান্স বই পড়লাম। বইটি পড়তে পড়তে মনে পড়ে যায় ড্যান ব্রাউনের লেখা “দ্যা ভিঞ্চি কোড” এর কথা। সম্ভবত দ্যা ভিঞ্চি কোড থেকে অনুপ্রাণিত লেখাক। ব্যক্তিগতভাবে দ্যা ভিঞ্চি কোড পড়তে পড়তে অহেতুক কাহিনী দীর্ঘায়নের ফলে কখনও কখনও বিরক্ত হয়েছিলাম।  কিন্তু দ্যা মহাভারত সিক্রেট’র ক্ষেত্রে তা একেবারেই হয়নি। যদিও অনেকটা সিনেমা স্টাইলের বর্ণনা তার পরেও কাহিনী নির্মাণে দক্ষতার পরিচয়ই দিয়েছেন ক্রিস্টোফার সি ডয়েল, অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে। যদিও কিছু কিছু বিষয়ে আরো প্রসারিত করার সুযোগ ছিল লেখকের যেমন সম্রাট অশোকের উপস্থিতি, রাধা ও বিজয়ের প্রেমময় সম্পর্ক। তার পরেও সব মিলিয়ে বেশ ভালই লেগেছে বইটি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন